সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে সেটা নির্ভর করে পিতার শুক্রাণুতে থাকা ক্রোমোজোমের ওপর।
মায়ের শরীরে থাকে X ক্রোমোজোম এবং পিতার শরীরে থাকে Yক্রোমোজোম।
যখন মায়ের X ক্রোমোজোম এর সাথে পিতার Y ক্রোমোজোম এর সংযোগ হয় তখন সন্তান ছেলে হয়। আর যখন মায়ের X ক্রোমোজোম এর সাথে পিতার X ক্রোমোজোম এর সংযোগ হয় তখন সন্তান মেয়ে হয়।
পুরুষের শুক্রানুতে দুই ধরনেরই ক্রোমসোম আছে কিন্তু মেয়েদের ডিম্বানুর মধ্যে দুইটাই X ক্রোমসোম।
যখন পুরুষের শুক্রানুর X ক্রোমসোম মহিলার ডিম্বানুতে প্রবেশ করে তখন দুইটা X ক্রোমসোম থেকে মেয়ে শিশুর জন্ম হয় এবং যখন পুরুষের শুক্রানু থেকে Y ক্রোমসোম মহিলেদের ডিম্বানুতে প্রবেশ করে তখন X-Y ক্রোমসোম মিলিত হয়ে ছেলে শিশুর জন্ম হয়।
তাই সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে হবে সেটা সম্পূর্নভাবে নির্ভর করে পুরুষের উপর।
এখানে মেয়েদের কোন ভূমিকা নাই।তারপরেও আমাদের সমাজে এখনও অনেক ক্ষেত্রে মেয়েদেরই দোষী সাব্যাস্ত করা হয় এবং পুরুষকে আবার বিবাহও দেওয়া হয় অনেক ক্ষেত্রে।
প্রশ্ন হলো কি করলে ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেশী?
শারিরীক সম্পর্কের পর যখন শুক্রানু পুরুষের শরীর থেকে মহিলার শরীরে প্রবেশ করে তখন ক্রোমসোমের একটা জীবনকাল থাকে। Y ক্রোমসোম পুরুষের শরীর থেকে মেয়েদের শরীরে প্রবেশ করার পর মতান্তরে এক থেকে তিন (১-৩) দিন বেচে থাকে এবং X ক্রোমসোম পুরুষের শরীর থেকে মেয়েদের শরীরে প্রবেশ করার পর মতান্তরে তিন থেকে পাঁচ (৩-৫) দিন বেচে থাকে । আমরা ঝুঁকি এড়ানোর জন্য সর্বনিম্ন জীবনকালকে ধরে নিব।
এছাড়া Y ক্রোমসোম খুবই দ্রুত গতিসম্পন্ন এবং শক্তিশালী হয়ে থাকে। তাই যদি মহিলার শরীরে X এবং Y দুইটাই উপস্থিত থাকে তাহলে Y ক্রোমসোমই নিষিক্ত করবে আর ছেলে সন্তান হবে। কিন্তু সমস্যা হয় অনেকক্ষেত্রে ডিম্বানু তৈরি হওয়ার সময় জীবনকাল কম হওয়ার কারনে Y ক্রোমসোম উপস্থিত থাকেনা ফলে X ক্রোমসোম দ্বারা ডিম্বানু নিষিক্ত হয় এবং মেয়ে সন্তান হয়।
আমরা বিষয়টাকে একটু বোঝার চেষ্টা করি। মনে করেন আপনি আপনার সঙ্গিনীর সাথে আজ মিলিত হলেন কিন্তু এই মুহুর্তে আপনার সঙ্গিনীর শরীরে ডিম্বানু তৈরি হয়নি। এখন যদি আপনার সঙ্গিনীর শরীরে তিন দিন পরে ডিম্বানু তৈরি হয় এবং এই তিন দিনের মধ্যে আপনি তার সাথে আর শারিরীক সম্পর্ক না করেন তাহলে আপনার সঙ্গিনীর শরীরে উপস্থিত সকল Y ক্রোমসোম ততক্ষনে মারা যাবে এবং শুধু X ক্রোমসোম নিষিক্ত হওয়ার জন্য উপস্থিত থাকবে। ফলশ্রুতিতে আপনার মেয়ে সন্তান হবে। সূতরাং আপনাকে ছেলে সন্তান পেতে হলে ডিম্বানু তৈরির সময়কালে আপনার সঙ্গিনীর সাথে প্রতিদিন মিলিত হতে হবে।
এখন আপনাকে জানতে হবে আপনার সঙ্গিনীর শরীরে কখন ডিম্বানু তৈরি হয় এবং তার জীবনকাল কত। মেয়েদের শরীরে ডিম্বানুর জীবনকাল ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা । সুতরাং আপনি যদি ছেলে সন্তান চান তাহলে এই ১২-২৪ ঘন্টার মধ্যে আপনার সঙ্গিনীর শরীরে Y ক্রোমসোমের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
মনে করেন আপনার সঙ্গিনীর মাসিক নিয়মিত হয় এবং সেটা প্রতিমাসে ২৮ দিন পর পর হয়। তাহলে আপনি ২৮/২=১৪(+-)৩ দিন হিসাব করে মিলিত হতে হবে।
উদহরনস্বরুপ ধরা যাক আপনার সঙ্গিনীর শেষ মাসিক হয়েছিল জানুয়রী মাসের ১ তারিখ। যদি তার মাসিক নিয়মিত হয় এবং ২৮ দিন পর পর হয় তাহলে ১+১৪=১৫ তারিখ মধ্যমা ধরে ৩ দিন যোগ-বিয়োগ করে ১৫-৩=১২ই জানুয়ারী থেকে ১৫+৩=১৮ তারিখ পর্যন্ত সময়কে উর্বর সময় ধরতে হবে। এবং এই ১২ তারিখ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন আপনার সঙ্গিনীর সাথে শারিরীকভাবে মিলিত হতে হবে। মনে রাখতে হবে এই ৭ দিন সময়ে কোন জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি ব্যাবহার করা যাবেনা এবং এই সময়টাতে প্রতিদিন কমপক্ষে একবার মিলিত হতে হবে। প্রতি ২৪ ঘন্টাকে দিন হিসাব করে প্রতিদিনে কমপক্ষে একবার মিলিত হতে হবে, একাধিকবার মিলিত হতে পারলে আরও ভালো হয়। এই ৭ দিনের আগে নিরাপদ পদ্ধতি ব্যাবহার করতে হবে এবং বেশী নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও ৩-৪দিন যোগ করতে পারেন।
মোটকথা ছেলে সন্তান নেওয়ার জন্য প্রতিদিন সহবাস করতে হবে যে সময়টায় স্ত্রীর ডিম্বপাত হয়।
4 Comments
অত্যন্ত উপকারী পোস্ট
ReplyDeleteInformative post
ReplyDeleteVery helpful
ReplyDeleteThanks.stay connected
Delete